Wednesday, November 5
Home>>HSC Accounting>>Chapter-3: Bank Reconciliation Statement (ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী )
HSC Accounting

Chapter-3: Bank Reconciliation Statement (ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী )

নিচে পিডিএফ (PDF) ফাইল দেয়া আছে

উচ্চমাধ্যমিক হিসাববিজ্ঞান

তৃতীয় অধ্যায়

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী

(Bank Reconciliation Statements)

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী হলো এমন একটি প্রতিবেদন বা বিবরণী যা কোন একটি প্রতিষ্ঠানের নিজ হিসাব বইতে লিখিত ব্যাংক হিসাব এর সাথে ব্যাংক কর্তৃক সরবাহকৃত বা ব্যাংক হতে সংগৃহীত সংশ্লিষ্ট হিসাবের ব্যাংক বিবরণীতে (Bank Statement) প্রদর্শিত স্থিতির  তুলনা করে। এটি প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব বিবরণীতে প্রদর্শিত স্থিতি এর সাথে প্রতিষ্ঠানের নিজ হিসাব বইতে লিখিত ব্যাংক হিসাব এর স্থিতির মধ্যে কোন অমিল আছে কিনা তা সনাক্ত করে এবং কোন অমিল থাকলে তার কারণ ব্যাখ্যা  করে।

কোন প্রতিষ্ঠান যখন ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করে তখন সেখানে দুটি পক্ষ থাকে। এক পক্ষ হলো ব্যাংক এবং অপর পক্ষ হলো হিসাব পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান বা হিসাব ধারক। জমা হিসাবের ক্ষেত্রে ব্যাংকের কাছে হিসাব ধারকের অর্থ জমা থাকে বিধায় এটি হিসাব ধারকের সম্পদ এবং ব্যাংকের জন্য দায়। অর্থাৎ ব্যাংকের নিকট গ্রাহকের ব্যাংক স্থিতি নামক সম্পদ থাকে এবং গ্রাহকের প্রতি ব্যাংকের ডিপোজিট নামক দায় থাকে। ফলে গ্রাহক প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাংক উভয়কেই উক্ত ব্যাংক হিসাবের লেনদেন এবং স্থিতির হিসাব সংরক্ষণ করতে হয়। ব্যাংক তার হিসাব বইতে গ্রাহকের নামে হিসাব সংরক্ষণ করে এবং গ্রাহকের চাহিদানুসারে বা নির্দিষ্ট সময়ান্তে ব্যাংক হিসাব বিবরণী (Bank Statement) আকারে গ্রাহককে সরবরাহ করে। উক্ত ব্যাংক বিবরণীতে গ্রাহকের সকল লেনদেন তারিখ অনুসারে ক্রমধারায় উল্লেখ থাকে এবং প্রতিটি লেনদেনের পর উক্ত হিসাবের স্থিতি প্রদর্শিত হয়।

উল্লেখ্য, তথ্য প্রযুক্তির (Computer)  ব্যবহার শুরু হওয়ার আগে ব্যাংক গ্রাহকদেরকে পাশ বই নামে একটি হিসাবের বই সরবরাহ করত, যাতে দৈনন্দিন লেনদেন সমূহ লিপিবদ্ধ থাকত। বর্তমানের ব্যাংক হিসাব বিবরণী হলো সনাতন পাশ বই এর আধুনিক রূপ।

অপরদিকে উক্ত গ্রাহক প্রতিষ্ঠানও তাদের নিজেদের হিসাব বইতে উক্ত ব্যাংকের নাম ও হিসাব নাম্বারের বিপরীতে একটি হিসাব সংরক্ষণ করে, যেখানে উক্ত হিসাবের সকল লেনদেন এবং লেনদেন শেষে স্থিতি উল্লেখ থাকে।

যেহেতু ব্যাংক এবং গ্রাহক উভয়েই উক্ত হিসাবের সকল লেনদেন লিপিবদ্ধ করে এবং লেনদেন পরবর্তী স্থিতি উল্লেখ করে, আপাতঃ দৃষ্টিতে উভয়ের হিসাবের বিবরণ ও স্থিতি এক বা সমপরিমাণ হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে বিভিন্ন করনে উভয় পক্ষ কর্তৃক রক্ষিত হিসাবের স্থিতি একই রকম হয় না। এ কারণে গ্রাহক প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের হিসাবের সাথে ব্যাংক কর্তৃক সরবরাহকৃত বিবরণীর লেনদেন এবং স্থিতি মিলিয়ে দেখতে হয় এবং উভয় বিবরণীর মধ্যে কোন অমিল থাকলে তার কারণ চিহ্নিত করে ব্যাখ্যা প্রস্তুত করতে হয়।

গ্রাহক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত এ বিবরণীকেই বলা হয় ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী (Bank Reconciliation Statements)। এ বিবরণী হিসাব ধারক কর্তৃক প্রস্তুত করা হয় এবং হিসাব ধারক ও ব্যাংক উভয়ের হিসাবের মধ্যে পার্থক্য থাকলে তা চিহ্নিত করে উক্ত পার্থক্যের কারণ ব্যাখ্যা করে হিসাব প্রস্তুত করা হয়।

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত প্রনালী

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুতের ক্ষেত্রে সাধারণত নিচের প্রণালীর প্রয়োগ করা হয়;

প্রথম ধাপ: কোম্পানীর হিসাব বিভাগ ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী তৈরী করে। প্রথম পর্বে হিসাব বিভাগকে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হতে ব্যাংক হিসাব বিবরণী সংগ্রহ করতে হয়। যদি উক্ত কোম্পানীর একাধিক ব্যাংক হিসাব থাকে তবে প্রতিটি হিসাবের জন্য ব্যাংক বিবরণী সংগ্রহ করতে হয়। ব্যাংক হিসাব বিবরণী হলো ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুতের প্রাথমিক বা প্রধান উপকরণ। ব্যাংক হিসাব বিবরণীতে তারিখের ক্রমধারায় চারটি বিষয় উল্লেখ থাকে ১. মাসের শুরুতে স্থিতির পরিমাণ, ২. ঐ মাসে উক্ত হিসাব হতে কি পরিমাণ অর্থ চেকের বিপরীতে বা অন্যকোন নির্দেশের প্রেক্ষিতে পরিশোধ করা হয়েছে ৩. কি পরিমাণ অর্থ উক্ত হিসাবে নগদ বা ক্লিয়ারিং বা স্থানান্তরের মাধ্যমে জমা হয়েছে এবং ৪. সমাপনী  স্থিতি, এছাড়া সংক্ষিপ্ত বিবরণও উল্লেখ থাকে।

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণীর অপর গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হলো কোম্পানী তথা হিসাব ধারক এর হিসাব বইতে সংরক্ষিত ব্যাংক হিসাব বা নগদান বইয়ের ব্যাংক কলাম এবং চেক ইস্যু ও জমার রেজিষ্ট্রার। ব্যাংক হিসাব বা নগদান বইয়ের ব্যাংক কলাম এ উক্ত কোম্পানী  তার ব্যাংক হিসাবে যে অর্থ জমা করেছে বা আদায়ের জন্য চেক জমা করেছে এবং উক্ত হিসাব হতে যে অর্থ উত্তোলন করেছে বা তৃতীয় পক্ষকে যে চেক ইস্যূ করা হয়েছে  অথবা পরিশোধের জন্য অন্য কোন পদ্ধতিতে নির্দেশ প্রদান করেছে, তার বর্নণা থাকে। চেক ইস্যু রেজিষ্ট্রারে প্রতিটি ইস্যুকৃত চেকের তারিখ, প্রাপকের নাম সহ অন্যান্য বিবরণ উল্লেখ থাকে। আর চেক জমা রেজিষ্ট্রারে বিভিন্ন পক্ষ হতে প্রাপ্ত যে সকল চেক আদায়ের জন্য ব্যাংকে জমা করা হয়, তারিখের ক্রমধারায় তার বর্ণনা থাকে।

উল্লেখ্য, ব্যাংক হিসাব বিবরণীতে ব্যাংক যে সকল লেনদেন সম্পন্ন করেছে কেবল সে সকল লেনেদেন অন্তর্ভূক্ত থাকে। অপরদিকে হিসাব ধারক এর হিসাব বইতে হিসাব ধারক কর্তৃক যে সকল লেনদেন শুরু করা হয়েছে, তা ব্যাংক কর্তৃক সম্পন্ন করা হোক বা না হোক, তার বর্ণনা থাকে।   

দ্বিতীয় ধাপঃ এ পর্যায়ে ব্যাংক হিসাব বিবরণীর সাথে হিসাব ধারক এর হিসাব বইয়ের অমিল সমূহ চিহ্নিত করা হয়। অর্থাৎ যে সকল লেনদেন সমূহ হিসাব ধারক কর্তৃক নগদান বইয়ের ব্যাংক কলামে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং সাথে সাথে ব্যাংক কর্তৃকও সম্পন্ন করা হয়েছে এবং ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত হয়েছে তা চিহ্নিত করে হিসাব বইতে হিসাবভুক্ত করা হয়। পক্ষান্তরে যে সকল লেনদেন সমূহ হিসাব ধারক কর্তৃক হিসাব ভুক্ত করা হয়েছে অথচ ব্যাংক কর্তৃক সম্পন্ন করা হয়নি বা ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত হয়নি তা চিহ্নিত করা হয় এবং সমন্বয়ের জন্য তালিকাভুক্ত করা হয়।

তৃতীয় ধাপঃ অনিষ্পন্ন লেনদেন সমূহের একটি তালিকা প্রস্তুতের পর এ পর্যায়ে লেনদেনটি কোথায় কিভাবে সমন্বিত হবে এবং টাকার অংকে এর পরিমাণ কি হবে তা নিরূপণ করা হয়। অর্থাৎ যে সকল লেনদেন ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত হয়েছে অথচ নগদান বইয়ের ব্যাংক কলামে প্রদর্শিত হয়নি  সে সকল লেনদেন সমূহ নগদান বইয়ের ব্যাংক কলামের স্থিতির সাথে সমন্বয় করা হবে অথবা ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত স্থিতির সাথে সমন্বয় হবে তা নিরূপণ এবং অর্থের মূল্যে কত টাকা সমন্বয় করা হবে তা নিরূপণ করা হয়। 

চতুর্থ বা চুড়ান্ত ধাপঃ এ পর্যায়ে ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত স্থিতির সাথে অসমন্বিত লেনদেন সমূহ সমন্বয় করে ব্যাংক জমার সমন্বিত স্থিতি নিরূপণ করা হয় এবং নগদান বইয়ের ব্যাংক কলামে প্রদর্শিত ব্যাংক জমার স্থিতির সাথে মিলানো হয়। যেমন ব্যাংক হিসাব হতে চেকের মাধ্যমে পরিশোধকৃত  যে সকল লেনদেন হিসাব বইতে নথিভুক্ত করা হয়েছে অথচ ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত হয়নি এ সকল লেনদেন সমূহ ব্যংক কর্তৃক পরিশোধ করার পর ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত স্থিতি হ্রাস পাবে। সুতরাং ব্যাংক সমন্বয় বিবরণীর মাধমে ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত স্থিতি হ্রাস করা হয়। এ কাজটি সম্পন্ন করার পর ব্যাংক বিবরণীতে প্রদর্শিত স্থিতি এবং নগদান বইয়ের ব্যাংক কলামে প্রদর্শিত ব্যাংক জমার স্থিতির পরিমাণ এক হবে। বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে এ ধাপ গুলো সামনে আলোচনা করা হবে।

নগদান বই ও ব্যাংক বিবরণীর মধ্যে গরমিলের কারণ

১.         চেক ইস্যু করা হয়েছে কিন্তু পরিশোধের জন্য উপস্থাপন করা হয়নিঃ চেক ইস্যু করার সাথে সাথে নগদান বইতে লিপিবদ্ধ করা হয়। কিন্তু চেকের প্রাপক সাথে সাথে উপস্থাপন না-ও করতে পারেন, সেক্ষেত্রে চেকটি অপরিশোধিত থাকার কারণে ব্যাংক খতিয়ানে লিপিবদ্ধ করবে না এবং ঐ পরিমাণ অর্থ ব্যাংকের খতিয়ানে অধিক উদ্বৃত্ত হিসেবে প্রদর্শিত হবে।  আইন অনুসারে একটি চেকের উপস্থাপনের সময় সীমা ছয় মাস থাকে। কোন কোন চেক ছয়মাস অতিক্রান্তের পরও ব্যাংকে অনুপস্থাপিত থাকতে পারে। ছয় মাস অতিক্রান্তের পর ব্যাংক উক্ত চেক আর পরিশোধ করবে না। এমতাবস্থায় বিষয়টি নিষ্পত্তি না করা পর্যন্ত উক্ত অর্থের জন্য ব্যাংক বিবরণী ও নগদান বইয়ের মধ্যে পার্থক্য থেকে যাবে। 

২.         আদায়ের জন্য উপস্থাপিত চেক আদায় না হওয়াঃ হিসাব ধারক আদায়ের জন্য কোন চেক তার ব্যাংকে জমা দেয়ার সাথে সাথে নগদান বইতে ডেবিট দিকে লিপিবদ্ধ করে। অপরদিকে কেবলমাত্র আদায়ান্তে ব্যাংক তার খতিয়ানে ক্রেডিট করে থাকে। আদায়ের জন্য চেক কিছু সময় ক্লিয়ারিং হাউজে থাকে এবং কখনো কখনো অপরিশোধিত অবস্থায় ফেরত আসতে পারে। এক্ষেত্রে উভয় বই এর মধ্যে পার্থক্য থাকবে।

৩.        ব্যাংক কর্তৃক সুদ প্রদানঃ ব্যাংক গ্রাহকের হিসাবে সুদ প্রদান করতে পারে এবং এ সুদ দ্বারা গ্রাহকের হিসাব ক্রেডিট করে থাকে। গ্রাহক সাধারণত পরবর্তীতে এ রূপ সুদের তথ্য জানতে পারে এবং জানার পর নগদান বইয়ের ব্যাংক কলামে ডেবিট করে। এ দু সময়ের মধ্যে উভয় বইতে উক্ত সুদের জন্য পার্থক্য থাকবে।

৪.         ব্যাংক কর্তৃক আরোপিত সুদ ও ব্যাংক চার্জঃ ব্যাংক কখনো কখনো গ্রাহকের হিসাব হতে জমাতিরিক্ত উত্তোলনের উপর সুদ চার্জ করে থাকে এবং ব্যাংকিং সেবা দেয়ার জন্য ব্যাংক চার্জ আরোপ করে। এ রূপ সুদ ও চার্জ ব্যাংক তাৎক্ষনিকভাবে গ্রাহকের হিসাবে ডেবিট করে এবং গ্রাহককে পরবর্তীতে অবহিত করে। গ্রাহক অবহিত হওয়ার পর তার হিসাবে লিপিদ্ধ করে। এ সময়ের মধ্যে উক্ত সুদ ও চার্জের জন্য উভয় হিসাবে পার্থক্য থাকে।

৫.         ব্যাংক কর্তৃক সুদ ও লভ্যাংশ আদায়ঃ কখনো কখনো ব্যাংক গ্রাহকের পক্ষে সরকারী সঞ্চয় পত্রের সুদ, কোম্পানীর শেয়ারে বিনিয়োগ হতে লভ্যাংশ ইত্যাদি আদায় করে থাকে এবং পরবর্তী সময়ে হিসাব ধারককে অবহিত করে। হিসাব ধারক তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি অবগত না হওয়ার কারণে নগদান বইতে হিসাবভুক্ত করেন না। এ কারণে উভয় বিবরণীর স্থিতির মধ্যে পার্থক্য দেখা দিতে পারে।

৬.        ব্যাংক কর্তৃক সরাসরি পরিশোধঃ হিসাবধারকের নির্দেশে ব্যাংক কখনো কখনো গ্রাহকের হিসাব হতে সরাসরি তৃতীয় পক্ষকে অর্থ পরিশোধ করে। যেমন ইন্স্যুরেন্স প্রিমিয়াম, ঋণের কিস্তি  ইত্যাদি। এরূপ ক্ষেত্রে ব্যাংক অর্থ পরিশোধ করার পর হিসাব ধরককে এডভাইস সরবরাহ করে অবহিত করে। ফলে গ্রাহক এডভাইস পাওয়ার পর নগদান বইতে লিপিবদ্ধ করে আর ব্যাংক তার আগে লিপিবদ্ধ করে। উভয় পক্ষ কর্তৃক লিখার সময়ের ব্যবধানের কারণে উভয় হিসাবে পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। 

৭.        তৃতীয় পক্ষ কর্তৃক জমা প্রদানঃ কখনো কখনো হিসাবধারকের হিসাবে তার কোন দেনাদার বা ক্রেতা সরাসরি অর্থ জমা করে। এরূপ ক্ষেত্রে হিসাবধারক কেবল ব্যাংকের প্রাপ্তি স্বীকার বা জমা রশিদ অথবা ব্যাংক বিবরণী পাওয়ার পরই নগদান বইতে হিসাবভুক্ত করে। উভয় পক্ষ কর্তৃক হিসাবভুক্ত করার ক্ষেত্রে তারিখের ব্যবধান হতে পারে এবং এ কারণে উভয় হিসাবের মধ্যে পার্থক্য দেখা দিতে পারে।

৮.        বাট্টাকৃত বিলের অমর্যাদাঃ হিসাব ধারক তার প্রাপ্য বিল ব্যাংকের নিকট হতে বাট্টায় নগদায়ন করতে পারে। পরবর্তীতে যদি উক্ত বিল আদায় না হয়, ব্যাংক উক্ত অমর্যাদাকৃত বিলের বিপরীতে গ্রাহকের হিসাব ডেবিট করে এবং হিসাব ধারককে অবহিত করে। হিসাব ধারক ব্যাংক এডভাইস পাওয়ার পর লেনদেনটি হিসাবভুক্ত করে। এ কারণে উভয় হিসাবের মধ্যে পার্থক্য পরিলক্ষিত হতে পারে।

৯.         কারণিক ভুল-ভ্রান্তিঃ ব্যাংক বা গ্রাহকের হিসাব লিখা, যোগ করা বা জের টানায় কারণিক ভুলের কারণে উভয় হিসাবে গরমিল হতে পারে।

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করণ

নগদান বই এবং ব্যাংক বিবরণীর মধ্যেকার পার্থক্য চিহ্নিত করার পর ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করা যায়। নিচের দুটি পদ্ধতির কোন একটি অনুসরণ করে ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করা হয়;

১.         নগদান বই সংশোধন করার পর ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করা যায়।

২.         নগদান বই সংশোধন না  করে ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করা যায়।

তবে সাধারণত নগদান বই সংশোধন করার পর ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করা হয়ে থাকে আর এটি হলো আধুনিক পদ্ধতি।

ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করার বাস্তব উদাহরণ   

নিচে হামিদ ট্রেডার্স কর্তৃক সংরক্ষিত নগদান বই এর ব্যাংক কলাম এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক হিসাব বিবরণীর নমুনার সাহায্যে বিষয়টি দেখানো হলো;

  ABC Bank Limited
 Mouchak Branch
 MOUCHAK , DHAKA.
 Account Statement for the period from 01/12/2016  to 31/12/2016 23:59
Name :Hamid TradersAddress :HOUSE NO. 106, ROAD NO. 10, BAITUL AMAN HOUSING SOCIETY
Account No :   20501450202198300 
Branch Name :Mouchak Branch 
DateTrans IDInstrument NoPayment ModeWithdrawDepositBalanceParticulars
1/12/160  0102,300102,300B/F
3/12/161220499Transfer Clearing Credit024,000126,300CLEARING TRANSFER
4/12/162020737Remote Transfer Credit05,000131,300REMOTE DEPOSIT
7/12/162120273Transfer Clearing Credit03,000134,300CLEARING TRANSFER
8/12/166080218Remote Transfer Credit020,000154,300REMOTE DEPOSIT
10/12/167300F-4Transfer Debit1000154,200TRANSFER
12/12/168060MSMRemote Transfer Debit80,000074,200REMOTE TRANSFER
12/12/168120682Remote Transfer Credit05,00079,200REMOTE DEPOSIT
12/12/168120683BFTN0700,000779,200REMOTE DEPOSIT
13/12/168130434Cash Debit9,0000770,200CASH (self)
17/12/168170M09Cash Debit680,000090,200CASH (self)
18/12/169020F4A 10Transfer Debit1,050089,150TRANSFER
19/12/169090F4A 18Remote Transfer Debit2,000087,150REMOTE TRANSFER
20/12/169130F4A 27Remote Transfer Debit5,000082,150REMOTE TRANSFER
25/12/169150366Cash Debit6,000076,150CASH WITHDRAWAL
28/12/169206807Remote Transfer Debit6,500069,650REMOTE WITHDRAWAL
31/12/169320F5Transfer Debit40,000029,650TRANSFER
31/12/16203113iBanking Transfer Credit018,00047,650iTransfer:

হিসাব রক্ষক উপরোক্ত দুটি বিবরণী হতে ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করবে। উভয় বিবরণী সংগ্রহ করার পর উভয়ের মধ্যেকার গরমিল নিচের পদ্ধতিতে চিহ্নিত করা হয়;

ABC Bank Limited 
 Mouchak Branch 
 MOUCHAK , DHAKA. 
 Account Statement for the period from 01/12/2016  to 31/12/2016 23:59 
Name :Hamid TradersAddress :HOUSE NO. 106, ROAD NO. 10, BAITUL AMAN HOUSING 
Account No :   20501450200198300  
Branch Name :Mouchak Branch  
DateTrans IDInstrument NoPayment ModeWithdrawDepositBalanceParticulars
1/12/160  0102,300 √102,300B/F
3/12/161220499Transfer Clearing Credit024,000 √126,300CLEARING TRANSFER
4/12/162020737Remote Transfer Credit05,000 √131,300REMOTE DEPOSIT
7/12/162120273Transfer Clearing Credit03,000 √134,300CLEARING TRANSFER
8/12/166080218Remote Transfer Credit020,000˟154,300REMOTE DEPOSIT
10/12/167300F-4Transfer Debit100˟0154,200TRANSFER
12/12/168060MSMRemote Transfer Debit80,000√074,200REMOTE TRANSFER
12/12/168120682Remote Transfer Credit05,000 √79,200REMOTE DEPOSIT
12/12/168120683BFTN0700,000 √779,200REMOTE DEPOSIT
13/12/168130434Cash Debit9,000 √0770,200CASH (self)
17/12/168170M09Cash Debit680,000 √090,200CASH (self)
18/12/169020F4A 10Transfer Debit1,050 √089,150TRANSFER
19/12/169090F4A 18Remote Transfer Debit2,000 √087,150REMOTE TRANSFER
20/12/169130F4A 27Remote Transfer Debit5,000 √082,150REMOTE TRANSFER
25/12/169150366Cash Debit6,000 √076,150CASH WITHDRAWAL
28/12/169206807Remote Transfer Debit6,500 ˟069,650REMOTE WITHDRAWAL
31/12/169320F5Transfer Debit40,000 ˟029,650TRANSFER
31/12/16203113iBanking Transfer Credit018,000 ˟47,650iTransfer:

নগদান বই (ব্যাংক কলাম)

উপরোক্ত বিবরণী দুটি পাশাপাশি সাজিয়ে যে সকল লেনদেন সমূহ উভয় বিবরণীতে হিসাবভুক্ত হয়েছে তার বিপরীতে টিক (√) চিহ্ন দেয়া হয়েছে এবং যে সকল লেনদেন সমূহ কেবল একটি বিবরণীতে লেখা হয়েছে এবং অপরটিতে বাদ পরেছে সেগুলোর বিপরীতে ক্রস (˟) চিহ্ন দেয়া হয়েছে। এখন উভয় হিসাবের গরমিল গুলো নিয়ে নিম্নোক্ত ভাবে গরমিল লেনদেনের একটি তালিকা প্রস্তুত করা হবে।

১.      একজন ক্রেতা ৮/১২/১৬  তারিখে পণ্যমূল্য ২০,০০০ টাকা ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে অগ্রীম প্রেরণ করেছে, যা নগদান বইতে লিখা হয়নি।

২.      ব্যাংক চার্জ আরোপ করা হয়েছে ১০০ টাকা।

৩.     নির্দেশ অনুসারে ব্যাংক ৩১/১২/১৬  তারিখে ৪০,০০০ টাকার একটি প্রদেয় বিল পরিশোধ করেছে যা নগদান বইতে লিপিবদ্ধ হয়নি।

৪.      ৩১/১২/১৬  তারিখে একজন দেনাদার সরাসরি হিসাবে স্থানান্তর করেছে ১৮,০০০ টাকা, যা নগদান বইতে লিখা হয়নি।

৫.      একজন পাওনাদারকে ৬৫০০ টাকার একটি চেক প্রদান করা হয়েছে, যা যথারীতি পরিশোধিত হয়েছে কিন্তু নগদান বইতে লিখা হয়নি।

৬.     সুন্দরবন সিরামিক এর নিকট হতে প্রাপ্ত ৯২,০০০ টাকার একটি চেক ২৯/১২/১৬ তারিখে ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে যা এখনো আদায় হয়নি।

৭.     আলী হায়দার এর নিকট হতে প্রাপ্ত ৬৫,০০০ টাকার একটি চেক ২৯/১২/১৬ তারিখে ব্যাংকে জমা দেয়া হয়েছে যা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

৮.     রহিম ট্রেডার্সকে ৩১/১২/১৬ তারিখে একটি ১০,০০০ টাকার  চেক প্রদান করা হয়েছে যা এখনো উপস্থাপন করা হয়নি।

৯.      কর্মচারীদের বেতন ২৮,০০০ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে ৩১/১২/১৬ তারিখে যা পরিশোধিত হয়েছে ১/০২/১৬ তারিখে।

এ পর্যায়ে হিসাবরক্ষক গরমিল লেনদেনের উপরোক্ত তালিকার ভিত্তিতে নিম্নোকত্ ভাবে ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী প্রস্তুত করবেন (নগদান বই অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত)।  

হামিদ ট্রেডিং এর ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী

তারিখ: মার্চ ৩১, ২০১৬

উপরোক্ত ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী হতে লক্ষ্য করা যায় নগদান বইতে উল্লেখিত সমাপনী জের অর্থাৎ নগদান বই অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ১৭৫,২৫০ টাকার সাথে গরমিল লেনদেন সমূহ সমন্বয়  (যোগ/বিয়োগ) করার পর যে উদ্বৃত্ত ৪৭,৬৫০ টাকা পাওয়া গেছে তা ব্যাংক বিবরণীতে উল্লেখিত সমাপনী জের অর্থাৎ ব্যাংক বিবরণী অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ৪৭,৬৫০ টাকার সমান হয়েছে।

উপরোক্ত ব্যাংক সমন্বয় বিবরণীটি নগদান বই অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ভিত্তি ধরে তৈরী করা হয়েছে। নগদান বই অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ভিত্তি ধরার পরিবর্তে যদি ব্যাংক বিবরণী অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ভিত্তি ধরেও ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী তৈরী করা যায়।

নগদান বই অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ভিত্তি ধরার পরিবর্তে যদি ব্যাংক বিবরণী অনুসারে ব্যাংক জমার উদ্বৃত্ত ভিত্তি ধরা হয় তবে ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী হবে নিম্নরূপ; 

হামিদ ট্রেডিং এর ব্যাংক সমন্বয় বিবরণী

তারিখ: মার্চ ৩১, ২০১৬

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *